IPL 2025-এর এই মরসুমে সবচেয়ে নাটকীয় এবং শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচগুলোর একটি হয়ে রইল দিল্লি ক্যাপিটালস বনাম লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের এই লড়াই। ১ উইকেট হাতে রেখেই ম্যাচ জিতে নিল দিল্লি, যেখানে নায়ক হয়ে উঠলেন তরুণ ব্যাটার অশুতোষ শর্মা। তাঁর হাফ-সেঞ্চুরি শুধু ম্যাচ বাঁচায়নি, বরং দলের আত্মবিশ্বাসকেও নতুন করে জাগিয়ে তোলে।
প্রথম থেকেই দিল্লি ছিল কোণঠাসা। পাওয়ারপ্লে-তে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ম্যাচ হাতছাড়া মনে হচ্ছিল। তখনই অশুতোষ নামেন ক্রিজে, শুরু করেন নিজের ইনিংস একেবারে ঠাণ্ডা মাথায়। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে খেলেছেন দায়িত্বশীলভাবে। বিশেষ করে শেষ ৩ ওভারে যখন পরিস্থিতি চরমে, অশুতোষ ছিলেন অনড়। একের পর এক বাউন্ডারি আর সুইপ শটের মাঝে উঠে আসে তাঁর হাফ-সেঞ্চুরি, যে ইনিংস ভক্তদের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
IPL 2025 ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
- স্থান: ACA-VDCA ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ভিসাখাপত্তনম
- তারিখ: ২৪ মার্চ, ২০২৫
- প্রথম ইনিংস: LSG – ২০৯/৮
- দ্বিতীয় ইনিংস: DC – ২১১/৯ (১ উইকেটে জয়)
LSG বনাম DC ম্যাচ বিশ্লেষণ
লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের ইনিংস শুরু হয় জোরকদমে। মিচেল মার্শের ৭২ এবং নিকোলাস পুরানের ৭৫ রানের ইনিংস দারুণ ছন্দে থাকলেও মাঝপথে এসে দিল্লির বোলাররা ম্যাচে ফিরিয়ে আনে দলকে। কুলদীপ যাদবের ২ উইকেট এবং মার্শের হাত ধরে আসা ৩ উইকেট ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
ডেথ ওভারগুলোতে দিল্লির দুর্দান্ত বোলিং লক্ষ্ণৌকে ২৫০-এর গণ্ডি ছুঁতে দেয়নি। শেষদিকে ডেভিড মিলারের কিছু মারমুখী শট হলেও টোটাল দাঁড়ায় ২০৯/৮।
দ্বিতীয় ইনিংস: এক বিভীষিকাময় শুরু, এক অনবদ্য ফিনিশ
প্রথম ছয় ওভারেই দিল্লির চার উইকেট পড়ে যায়। মনে হচ্ছিল জয় অসম্ভব। তবে ত্রিস্তান স্টাবস ৩৪ রান করে ইনিংস গুছিয়ে নেন। এরপর আসে বিপ্রাজ নিগমের ক্যামিও—মাত্র ১৫ বলে ৩৯ রান। আর ঠিক এখানেই মঞ্চ প্রস্তুত হয় অশুতোষ শর্মার মহাকাব্যিক ইনিংসের জন্য।
শেষ ওভারে দরকার ছিল মাত্র কয়েক রান, হাতে ছিল শেষ উইকেট। ক্রিজে ছিলেন অশুতোষ, আর তিনিই এক ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করেন, যা ছিল আইপিএল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফিনিশ।
IPL 2025 DC vs LSG Highlights
দর্শক-ভরা বিশাখাপত্তনম স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচ ছিল উত্তেজনার চূড়ান্ত উদাহরণ। দিল্লি ক্যাপিটালস (DC) এবং লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস (LSG)-এর মধ্যে এই লড়াই ছিল টানটান উত্তেজনায় ভরা, যেখানে একেবারে শেষ বল পর্যন্ত চলেছে রোমাঞ্চ। শেষ পর্যন্ত, দিল্লি ক্যাপিটালস এক উইকেট হাতে রেখেই জিতে নেয় ম্যাচ, আর ম্যাচের হিরো ছিলেন অশুতোষ শর্মা, যিনি ব্যাট হাতে করলেন অবিশ্বাস্য এক হাফ-সেঞ্চুরি।
ম্যাচের পটভূমি ও টস সিদ্ধান্ত
দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেল টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। লক্ষ্ণৌর ব্যাটিং লাইনআপে ছিল মার্শ, পুরান, মিলার-এর মত তারকা ব্যাটাররা, যারা শুরুতেই আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে ব্যাট করতে নামেন। একসময় স্কোর ছিল ১৬৯/৪। সেখানে থেকে দিল্লির দুর্দান্ত বোলিংয়ে লক্ষ্ণৌ আটকে যায় ২০৯/৮ রানে।
LSG ইনিংসের প্রধান আকর্ষণ
- মিচেল মার্শ: ৭২ রান, দুর্দান্ত শুরুর ভিত গড়ে দেন।
- নিকোলাস পুরান: ৭৫ রান, লং শটে চাপে ফেলেছিলেন দিল্লিকে।
- ডেভিড মিলার: শেষ ওভারে গুরুত্বপূর্ণ বাউন্ডারি মেরে দলের রান কিছুটা বাড়ান।
- দিল্লির বোলিং: কুলদীপ যাদব ২ উইকেট, মার্শও বল হাতে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট!
DC ইনিংস: একটা সময় ভেবেছিল সবাই, এই ম্যাচ আর জেতা সম্ভব না!
যেখানে পাওয়ারপ্লেতেই দিল্লি হারায় চারটি উইকেট, সেখান থেকে ম্যাচ বের করে আনা সহজ ছিল না। তবুও ত্রিস্তান স্টাবস এবং বিপ্রাজ নিগম কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে দেন। নিগমের ১৫ বলে ৩৯ রান ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু আসল রূপকথা তখনো বাকি ছিল।
অশুতোষ শর্মার হাফ-সেঞ্চুরি: যখন আশার প্রদীপটুকুও নিভে যাচ্ছিল…
ক্রিজে দাঁড়িয়েছিলেন তরুণ অশুতোষ শর্মা। চাপের মুখে তার ৫০+ রানের ইনিংস ছিল যেমন বুদ্ধিদীপ্ত, তেমনই আগ্রাসী। শেষ তিন ওভারে যখন দরকার ছিল দ্রুত রান, তখন তিনি একাই নিলেন দায়িত্ব।
শেষ ওভারে দরকার ছিল মাত্র ৮ রান। এক বল বাকি থাকতে, ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জেতালেন তিনি। ক্রিজে নন-স্ট্রাইকে ছিলেন শেষ ব্যাটার। তাই ভুলের কোনো জায়গা ছিল না।
এমন মুহূর্তের জন্যই তো ক্রিকেট ভালোবাসে মানুষ!
Faf du Plessis-এর মন্তব্য: “He went God mode!”
ম্যাচ শেষে প্রাক্তন তারকা ফাফ দু প্লেসিস বলেন, “অশুতোষ শেষদিকে যেভাবে খেলল, সেটা যেন ‘God mode’-এ ঢুকে পড়া!” এমন মন্তব্যই বোঝায় তিনি ক্রিকেট মহলে কতটা আলোচিত হয়ে উঠেছেন।
রিষভ পন্থের হতাশাজনক অভিষেক
দুঃখজনক হলেও সত্যি, রিষভ পন্থ নিজের নতুন দলের হয়ে (LSG) প্রথম ম্যাচেই হতাশ করেন। মাত্র ৬ বলে ০ রানে আউট হয়ে যান।
DC vs LSG: হেড-টু-হেড রেকর্ড
- মোট ম্যাচ: ৬
- LSG জয়: ৩
- DC জয়: ৩
এই জয়ের পর দুই দল সমান সংখ্যক জয় নিয়ে এগিয়ে চলেছে।
পরবর্তী কী?
দিল্লি ক্যাপিটালস পরবর্তী ম্যাচ খেলবে আগামী সপ্তাহে, যেখানে তারা চাইবে এই জয়কে ইনস্পিরেশন হিসেবে নিয়ে আরও ভালো খেলতে। অশুতোষ শর্মার ফর্ম থাকলে দিল্লির জয়রথ থামানো কঠিন।
FAQs
DC বনাম LSG ম্যাচটি কোথায় হয়েছিল?
বিশাখাপত্তনমের ACA-VDCA স্টেডিয়ামে।
ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় কে ছিলেন?
অশুতোষ শর্মা, তাঁর অসাধারণ হাফ-সেঞ্চুরির জন্য।
LSG-এর বোলিং কেমন ছিল?
প্রথমদিকে দুর্দান্ত হলেও শেষদিকে ছন্দ হারিয়ে ফেলে।
রিষভ পন্থের কী ভূমিকা ছিল?
নতুন দলের হয়ে খেলে প্রথম ম্যাচেই শূন্য রানে আউট হন।
এই জয়ে DC-এর পয়েন্ট টেবিলে কী প্রভাব পড়েছে?
তারা এখন শীর্ষ ৪-এ পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে।
কে দিল্লির হয়ে সবথেকে ভালো বোলিং করেছে?
মিচেল মার্শ ও কুলদীপ যাদব—উভয়ের অবদান ছিল দুর্দান্ত।
উপসংহার: একটি জয়, একটি বার্তা!
আইপিএল কেবলমাত্র ক্রিকেট ম্যাচ নয়, এটি আবেগ, নাটকীয়তা এবং রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার মঞ্চ। দিল্লি ক্যাপিটালস বনাম লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের ম্যাচটি ছিল তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
অশুতোষ শর্মার ইনিংস শুধু ম্যাচ জেতায়নি, বরং আরও একবার প্রমাণ করে দিয়েছে—ক্রিকেটে সবকিছু সম্ভব। কে জানে, হয়তো তিনি আগামী দিনের মহাতারকা!
JitaBet , JitaWin , এবং JITA88 এ আপনার বাজি রাখুন , তারা সত্যিই ভাল প্রতিকূলতা অফার করে, খেলুন এবং বড় জিতুন!
মন্তব্য করুন